Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

দর্শনীয় স্থান

সুন্দরবনের আর্কষণীয় স্থানের বিবরণঃ

                   সুন্দরবনের আর্কষণীয় স্থান গুলোর মধ্যে করমজল , কটকা, কচিখালি  সমুদ্র সৈকত, নীলকমল . দুবলার চর . শেখেরটেক মন্দির, মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, হারবাড়িয়া , দোবেকী, কালিরচর, মৃগামারী, সুপতি, মুন্সিগঞ্জ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব স্থান গুলো তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে বৈচিত্রময় । আর তারই আকর্ষণে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক , গবেষক দর্শনার্থী সুন্দরবনের এ সমস্ত স্থানে ভ্রমন করে থাকেন । এসব আর্কষণীয় স্থান গুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো

 

করমজলঃ

           একদিনে সুন্দরবন ভ্রমন এবং সুন্দরবন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেওয়ার জন্য করমজল হচ্ছে সবচেয়ে উপযুক্ত ও আকর্ষণীয় স্থান । মংলা সমুদ্র বন্দরের খুব নিকটবর্তী হওয়ায় মংলা ফরেষ্ট অফিস থেকে মাত্র ৩ ঘণ্টার মধ্যে করমজল পরিদর্শন করে ফিরে আসা যায় । করমজলকে সুন্দরবনের মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে । এখানে প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থী -পর্যটক ভ্রমনে আসেন । অধিক সংখ্যক দর্শনার্থী ভ্রমন করার কারণে সুন্দরবনের মধ্যে আকর্ষণীয় স্থান গুলোর মধ্যে করমজল সর্বোচ্চ স্থানে পরিণত হয়েছে । এখানকার প্রধান প্রধান আকর্ষণ হলো- হরিণ , কমির , বানর , পাখি, কাঠের ট্রেইল, টাওয়ার , ম্যানগ্রোভ আরবোরেটাম ,  নৌকা চালনা , পশুরনদী , বিদেশী জাহাজ , জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য ইত্যাদি । বাংলাদেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্র এ করমজলে অবস্থিত । যা পর্যটকদের দারুণ ভাবে আকর্ষণ করে। 

 

 

হার বাড়িয়াঃ

             চাঁদপাই রেঞ্জের অন্তর্গত পশর নদীর তীরে মংলা থেকে ২০কিঃমিঃদূরে হার বাড়ীয়া নামক স্থানটি অবস্থিত। যার নৈসর্গিক প্রাকিতিক দৃশ্যাবলী পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষনীয়। এখানে কাঠের তৈরী দুইটা ট্রেইলসহ গোলাঘর, যার একটি পুকুর  সংলগ্ন, কাঠের তৈরী পুল ইত্যাদী রয়েছে। এখানে উন্নয়নের যে পরিকল্পনা গুলো হাতে নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে এ স্থানটি করম জলের মতন আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে।

 

 

কটকাঃ

       সুন্দরবনের দক্ষিন পূর্বকোনে অবস্থিত কটকা। সুন্দর বনের আকর্ষনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম এ কটকা। মংলাবন্দর থেকে প্রায় ৯০কিঃমিঃদুরে অবসিস্থত । এবং সুন্দরবন পুর্ব অভয়ান্যের মধ্যে প্রধান কেন্দ্র। এখানে বন বিভাগের একটি রেস্ট হাউস আছে। রেস্ট হাউসে লঞ্চ থেকে ওঠার জন্য এখানে কাঠের জেটি আছে । এ জেটি বেয়ে কিছু দুর হাটলেই রেষ্ট হাউস। এর সামনেই দেখা যায় সাগরের অথৈ জল রাসির বিশাল বিশাল ঢেউ। এর আশ পাশ রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় খাল। এসব খালে নৌকা নিয়ে ভ্রমন খুবই মজাদার। প্রকৃতির রুপ ও বিচিত্র রহস্র জ্ঞান্ও অভিজ্ঞতা  অর্জনের এক অপুর্ব সুযোগ। খালের ধারে দেখা যায় দলে দলে চিত্রল হরিণ চরে বেড়াতে। এছাড়া বানর, উদবিড়াল ও বন মোরগ দেখা যায়। মাঝে মাঝে বাঘের গর্জন ও শোনা যায়। অন্ধকার রাতে লক্ষ কোটি জোনাকীর আলোর মেলা মুগ্ধ ও বিমোহিত করে তোলে। সব মিলিয়ে কটকা একটি সৌদর্য উপভোগ্য স্থান । কটকার জামতলা পর্যবেক্ষণ  টাওয়ার থেকে দেখা যায়। বন্য প্রাণীর অপুর্ব দৃশ্য , হরিণ পালদের বিচরণ, শুকরের ছোটাছুটি ,বানরের কারসাজি, বাঘের হরিণ শিকার কিংবা রাজকীয় ভঙ্গিতে বাঘের চলার দৃশ্য ইত্যাদী পর্যটকদের ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট করে।

 

 

কচিখালিঃ

 

কচিখালি মংলা থেকে প্রায় ১০০কিঃমিঃদুরে অবস্থিত। এটি কটকার পাশাপাশি একটি অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান। সমুদ্র সৈকত এর প্রধান আকর্ষন । কটকার জামতলা পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে কচিখালি সমুদ্র সৈকত হয়ে বন বিভাগের কচিখালি স্টেশন পর্যন্ত পায়ে হাটা পথ। এ পথের পাশে ঘন অরণ্য মধ্যে দেখা যায় বাঘ, হরিণ, শুকর, বানর, বিষধর সাপ ইত্যাদী। এ স্থানে চলতে গেলে সাধারনতঃ একটু ভয় ভয় মনে হবে, কিন্তু দুঃসাহসী পর্যটকদের জন্য খুব মনোমুগ্ধকর্ও আকর্ষনীয়। এখানে রয়েছে একটি অভাবনীয় সুন্দর ও নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত যার সৈন্দর্য বর্ননাতীত। মাঝে মাঝে এ সৈকতে বাঘের বিচরন ও লক্ষ করা যায়। পর্যটকদের সুবিধার জন্য এখানে বন বিভাগে একটি রেষ্ট হাউস আছে যা পর্যটকগণ ভাড়া হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন।

 

নীল কমলঃ

মংলা থেকে প্রায় ১০০কিঃমিঃ এবং খুরনা থেকে প্রায় ১৪০কিঃমিঃ দক্ষিণে অবস্থিত নীল কমল। এটি সুন্দরবন দক্ষিণ অভয়ারন্যের একটি বিখ্যাত প্রশাসনিক কেন্দ্র। নীল কমল কে সবাই হীরন পয়েন্ট  বলেও জানে । যেহেতু  এখানে জঙ্গল, সে কারনে এখানে হরিণ থাকাটাই স্বাভাবিক। আর এখানে প্রচুর পরিমাণে হরিণ থাকার কারনে হরিন থেকে হিরণ পয়েন্ট নাম করন করা হয়েছে বলে অনেকের ধারনা। হরিন ছাড়াও এখানে রয়েছে বাঘ বন্যশুকর বানর উদ্দবিড়াল , এবং বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও নানা বর্ণের পাখির ঝাক। এর সামনে দিয়ে বয়ে গেছে একটি ছোট স্রোতাস্বিনী খাল। খালের দক্ষিণ পারে অবস্থিত নৌ ক্যাম্প ফরেস্ট অফিস রেস্ট হাউস আর উত্তর পাশে বিকাল বেলা হরিন আর বানরের পাল বিচরন করে। সে দৃশ্য খুবই মনোমুগ্ধকর । ১৯৯৭  খ্রিঃ ঘোষিত ৫২২ তম সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের ফলক এখানেই উম্মোচন করা হয । এখানে বন বিভাগের একটি রেস্ট হাউস ও মোংলা সুমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষের এক টি রেস্ট হাউস আছে। এ রেস্ট হাউসে পর্যটক দের থাকার সু ব্যাবস্থা রয়েছে ।

 

 

দুবলার চরঃ

সুন্দরবনের সর্ব দক্ষিনে এবং হিরোন পয়েন্টের পুর্ব দিকে অবস্থিত দুবলার চর । বঙ্গোপসাগরের কোলে অবস্থিত এই দ্বীপটি মৎস্য আহরোণ ও প্রক্রিয়াজাত করণের এক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত । বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের জেলেরা প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এখানে অস্থায়ী ঘর বাড়ি তৈরী করে সাগরে মাছ ধরে এবং তা প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে বিক্রি করে । মাছ ধরা মৌসুমে এখানে এসে না দেখলে বুঝানো যাবে না যে, প্রতিদিন কী পরিমাণে মাছ সংগ্রহ হয় এখানে । এ সময় কয়েক হাজার লোক মাছ ধরার কাজে এখানে আসে এবং তারা বছরের অর্ধেক সময় এ দ্বীপে অস্থায়ী ঘর বাড়ি বেঁধে বাস করে  বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও কৌতূহল মেটানোর জন্য এ দ্বীপ একটি আদর্শ স্থান । এছাড়াও এখানে রয়েছে একটি আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত । এখানে প্রতি বছর নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের রাস পূর্ণিমায় রাস মেলা বসে । হিন্দুদের পূণ্যস্নান উপলক্ষে এ রাস মেলা বসে । উক্ত রাস মেলা উপলক্ষে হাজার হাজার দেশী বিদেশী তীর্থ যাত্রী ও পর্যটকদের এখানে আগমন ঘটে ।

 

শেখেরটেকঃ

এখানে প্রায় ৪০০ বছরের পুরাতন একটি মন্দির আছে । শেখের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ এবং অনেক উচু জায়গায় ঘরবাড়ি চিহ্ন পাওয়া যায় । শিবসানদীর তীরে সুন্দরবনের মধ্যে শেখেরটেক মন্দিরটি অবস্থিত । এ মন্দিরটি ছোট ছোট ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে গাঁথনী । এর তেমন কোন সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি । তবে এখানকার পারি পার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হয় কোন এক সময় এখানে লোকের বসতি ছিল । বর্তমানে সংস্কারের অভাবে মন্দিরটির ভগ্নদশা এবং গভীর জঙ্গলের মধ্যে এ ধরণের সৃষ্ট কীর্তি পর্যটকদের মনে নানা কৌতূহল ও প্রশ্নের সৃষ্টি করে ।

 

মান্দার বাড়িয়াঃ

সুন্দরবনের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে এ অভয়ারণ্য অবস্থিত । প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য ও জীব বৈচিত্রের ভরপুর দুর্গম এ স্থানটি । সুন্দরবন ভ্রমনকারী (পর্যটকদের) দের গবেষণার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত । এখানকার ঘন বনে রয়েছে অতি ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র প্রাণী থেকে শুরু করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর উদ বিড়াল কচ্ছপ কুমির , সাপ, কাকড়া , ইত্যাদির সমারোহ । এখানে সমুদ্র সৈকতে বাতাসের প্রবাহে সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্য ভারি মজার । সাগরের গর্জন , সমুদ্রেও অথৈ জল রাশি ইত্যাদি । পর্যটক ও পর্যটনের এক আকর্ষনীয় বিষয় ।

 

এখানে উল্লেখ্য যে , সুন্দরবনের মাত্র কয়েকটি জায়গায় বর্ননা এখানে দেওয়া হয়েছে। সারা সুন্দরবনে রয়েছে বহু জায়গা , যেখানে ইকোট্যুরিজম করা যায় ।

 

সুন্দবনের এক বিশাল বন। এর গভীরতা ও বিশালতা পরিমাপ করা দুরুহ বিষয় । এ বনের মত এত বিশাল ও সৌন্দর্যশালী  বন পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই । বাংলাদেশের সুন্দরবন সহ অন্যান্য বন সমুহ সংরক্ষণের জন্য যারা বিভিন্ন পর্যায়ে নানান দায়িত্ব পালন পুর্বক বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদকে টিকিয়ে রেখেছেন নিম্মে তাদের পদবী  তালিকা তুলে ধরা হলো

বন মন্ত্রী-(Forest Minister)

বন সচিব- (Forest Secretary)

প্রধান বন সংরক্ষক- (C.C.F) Chief Conservative forest)

উপ-প্রধান বন সংরক্ষক-(D.C.C.F) Deputy Chief Conservative forest.

বন সংরক্ষক- (C.F) Conservative forest.

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা-(D.F.O) Divisional forest officer.

সহকারী বন সংরক্ষক- (A.C.F) Assistant Conservative forest.

বন রক্ষক কর্মকর্তা-(R.O) Ranger officer)

সহকারী বর রক্ষক- (D.R) Deputy Ranger.

বন রক্ষক-(Forester)

বন প্রহরী-(Forest guard)

নৌকা চালক- (Boat man)